
সংবাদ ২৪ বিডি নিউজ ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে কুয়াকাটা সৈকতের সদ্য নির্মাণাধীন সড়ক ভেঙে পড়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত অস্বাভাবিক জোয়ারে সাগরের ঢেউ সৈকতের পাশে নির্মিত সড়কটির দুই-তৃতীয়াংশ গুঁড়িয়ে দেয়। ভেঙে যাওয়া সড়কের অংশ সাগরের জোয়ারে ভেসে যায়।
ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে ছবি ও ভিডিওসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই লিখেছেন, “জনগণের টাকায় নির্মিত সড়ক জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেল, দায় কার?” স্থানীয়দের মতে, নির্মাণকাজে নিুম্নমানের উপকরণ ব্যবহার এবং পরিকল্পনার অভাবের কারণেই এমন পরিণতি হয়েছে।
সড়কটি মূলত ট্যুরিজম পার্ক থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে তিনটি প্যাকেজে মোট ২ কিলোমিটার পর্যন্ত নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে বিগত মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের সময় প্রথম ধাপে ১৩০০ মিটার কাজ শুরু হয়। বাকি ৭০০ মিটার কাজ এখনও শুরু হয়নি।
সড়কটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইয়াসীন সাদেককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী, কলাপাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম এ কমিটি গঠন করেন এবং সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—“সমুদ্র সৈকতসংলগ্ন রাস্তাটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। নির্মাণকাজ অত্যন্ত নিুম্নমানের। এখানে স্থানীয়ভাবে উত্তোলিত বালি, পাতলা ঢালাই ও প্রাথমিক কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ, ভুক্তভোগী প্রার্থীরা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের মতে, শুরু থেকেই এই প্রকল্পে তদারকির অভাব এবং স্বচ্ছতার ঘাটতি ছিল। এছাড়া স্থানীয়ভাবে বারবার উদ্বেগ জানানো হলেও তৎকালীন পৌর কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি তা আমলে নেয়নি।
এখন সবার প্রশ্ন—এই দুর্যোগ প্রকৃতির নাকি পরিকল্পনার ব্যর্থতা? তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুরো উপকূলবাসী।