বৃষ্টিতে ভিজে পরীক্ষার ফি কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, অধ্যক্ষ ড. ফাতেমা হেরেন আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে

এম.নাছির উদ্দীন কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের শিক্ষার্থীদের বৃষ্টিভেজা বিক্ষোভ আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তুলে এনেছে প্রতিষ্ঠানটির সংযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেনকে। বুধবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে, এইচএসসি প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফি কমানোর দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থী কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের নিকট থেকে ১৬৯০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করা হচ্ছে কোনো নির্দিষ্ট রশিদ ছাড়াই। অনেক ক্ষেত্রেই হাতে লেখা সাদা কাগজে স্লিপ দিয়ে টাকা নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। তারা জানান, পার্শ্ববর্তী আমতলী সরকারি কলেজে একই পরীক্ষার জন্য অনেক কম টাকা নেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি, এমনটাই দাবি তাদের।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘পরীক্ষার ফির নামে চাঁদাবাজি চলবে না’ স্লোগানে মুখর ছিল। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।

এদিকে, কলেজের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এক সময় ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অধ্যক্ষ ড. ফাতেমা হেরেন বর্তমানে রাজনৈতিক অবস্থান বদলে বিএনপি ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সূত্রটি আরও দাবি করে, কলেজের ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কক্ষের সাজসজ্জা, এসি বসানো, ক্যাম্পাসের পুকুরের মাছ, গাছ ও লোহার সরঞ্জাম বিক্রি থেকে আয়কৃত অর্থ সরকারি তহবিলে জমা না দিয়ে নানা অনিয়মে ব্যয় করেছেন তিনি।

এই অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত কোনো ফি ধার্য করা হয়নি। যারা পূর্বের পরীক্ষা দেয়নি, তাদের কিছু বকেয়া ছিল। এটাই তারা বেশি মনে করছে। সরকারি নিয়মেই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আজ আমি একটি প্রোগ্রামে ব্যস্ত ছিলাম। শিক্ষার্থীরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হচ্ছে।”

অর্থনৈতিক অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কলেজের আর্থিক লেনদেন নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে এবং রকেট অ্যাকাউন্টে ফি জমার প্রমাণপত্র অনুযায়ী পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেয়া হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. ফাতেমা হেরেন সম্প্রতি বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের সচিব পদে নিয়োগ পেলেও ছাত্রদের প্রতিবাদের মুখে যোগদান করতে পারেননি। একইভাবে বিএম কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে যোগদানের প্রচেষ্টাও ছাত্রদের বাধায় ভেস্তে যায়।

এইসব ঘটনার প্রেক্ষিতে কলেজপাড়ায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে, আর শিক্ষার্থীদের বৃষ্টিভেজা আন্দোলন যেন সেই চাপা ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ।

প্রয়োজনে এই নিউজটি পোস্টার বা কার্ড আকারেও তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য। বললে তৈরি করে দেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *