
এম. নাছির উদ্দীন (কলাপাড়া, পটুয়াখালী) : কলাপাড়া পৌরসভার উদ্যোগে সম্প্রতি উচ্ছেদকৃত ঐতিহাসিক ‘জ্বীন খাল’ পুনরুদ্ধার ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও সংগঠিত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। মংগলবার বিকাল ৪ টায় উপজেল কনফারেন্স হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত এ সভায় খাল পরিষ্কার, সীমানা নির্ধারণ, মাইকিং ব্যবস্থাপনা এবং নাগরিক সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
খাল পরিষ্কারে স্বেচ্ছাশ্রম ও সীমানা পিলার স্থাপন
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৪ মে ২০২৫, শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২:৩০ পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এবং পৌরসভার শ্রমিকদের সহায়তায় ‘জ্বীন খাল’-এর কবি নজরুল রোড থেকে কাসেম আলী স্কুল পর্যন্ত অংশে ময়লা-আবর্জনা, গাছপালা ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হবে।
একই দিন সরকারি সার্ভেয়ারের উপস্থিতিতে খালের সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপন করা হবে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে খালের ওপর দীর্ঘদিন ধরে থাকা অবৈধ দখলদারিত্ব রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এছাড়া, খেপুপাড়া ও কলাপাড়া মৌজাভুক্ত খালের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা চান্দিনা ভিটি (ডিসিআর) অনুমোদন আর নবায়ন করা হবে না বলেও জানানো হয়। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেয়েছেন।
মাইকিং ব্যবস্থাপনায় নতুন নিয়ম চালু
সভায় কলাপাড়া পৌরসভা এলাকায় মাইকিং নিয়ন্ত্রণে নতুন নীতিমালা নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী:
মঙ্গলবার আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে শুধু ডাক্তার সংক্রান্ত প্রচার করা যাবে।
খেলাধুলা, মেলা, সমাবেশ বা অন্যান্য প্রচারণা প্রতিদিন আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত চালানো যাবে।
জরুরি সরকারি নির্দেশনা, আইনশৃঙ্খলা ও দুর্যোগসংক্রান্ত তথ্য যে কোনো সময় প্রচার করা যাবে।
শোক সংবাদ, নাগরিক সেবা ও রাজনৈতিক জরুরি ঘোষণা সময় বিবেচনায় প্রচারযোগ্য থাকবে।
ইউনিয়নভিত্তিক মাইকিং নীতিমালা পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।
নাগরিক দায়বদ্ধতা ও উন্নয়ন তাগিদ
পৌর শহরের ড্রেন, কালভার্ট, রাস্তা নির্মাণ ও খাল উদ্ধার কার্যক্রম আরও বেগবান করতে নাগরিকদের বকেয়া পানি ও বিদ্যুৎ বিল দ্রুত পরিশোধে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সর্বস্তরের প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সম্মিলিত উপস্থিতি
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি, জামায়াত ইসলামের সম্মানিত আমীর, কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ, নাগরিক সংগঠন এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সকলেই খাল উদ্ধারে সর্বাত্মক সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এ উদ্যোগকে কলাপাড়াবাসী এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, যা শুধু একটি খাল নয়, বরং শহরের পরিবেশ, নালার পানি প্রবাহ, ও নাগরিক স্বাস্থ্য-সুরক্ষায় সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।