
এম. নাছির উদ্দীন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এক পর্যটককে হোটেল কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও মোটা অঙ্কের টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে যুবদল নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৫ মে) গভীর রাতে পর্যটকের ৯৯৯ নম্বরে ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ ওই অভিযান চালায়।
গ্রেফতাররা হলেন—কুয়াকাটা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ও ব্লু-বার্ড হোটেলের ভাড়াটিয়া মালিক মো. বেল্লাল হোসেন (৪৫), তার দুই সহযোগী রিয়াজ (২৪) ও শাকিল (২৪)। পলাতক রয়েছেন মামলার আরেক আসামি ইউসুফ হাওলাদার (২৭)।
মহিপুর থানা পুলিশ জানায়, আটক পর্যটক তুহিন (ঢাকা মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা) অভিযোগ করেন—তিনি চার দিন আগে ১ হাজার টাকা দৈনিক ভাড়ায় কুয়াকাটার ব্লু-বার্ড হোটেলে ওঠেন। চার দিন পর হোটেল কর্তৃপক্ষ তার কাছে ১২ হাজার টাকা দাবি করলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এর জের ধরে তাকে মারধর করে রুমে তালাবদ্ধ রাখা হয় এবং সাথে থাকা ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে আরও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
পর্যটক তুহিন ৯৯৯-এ ফোন করলে মহিপুর থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে মহিপুর থানায় ০২(৫)/২০২৫ নম্বরে মামলা রুজু হয়।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্লু-বার্ড হোটেলটি দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। হোটেল ব্যবসার আড়ালে চলছিল পতিতাবৃত্তি এবং চাঁদাবাজির নানা অভিযোগ। হোটেল মালিক বেল্লাল হোসেন দাবি করেন, পর্যটক পরিচয়ে তুহিনের সঙ্গে লেনদেনের জটিলতা থেকেই এই বিরোধের সৃষ্টি।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, “৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ গিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। পলাতক আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।”
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মো. ফারুক বলেন, “ব্যক্তির কোনো অপকর্মের দায় দল নেবে না। যুবদলের নামে কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”