মায়ের করুণ আহাজারি: “যে সন্তান জন্ম দিলাম, সে-ই আজ আমার হাত ভেঙে দিল

এম. নাছির উদ্দীন
পটুয়াখালীর মহিপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ছেলের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন ৬৫ বছর বয়সী মা নূরনেছা বেগম। সোমবার বিকেলে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের মেহেরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আহত মা থানায় ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, পারিবারিক জমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের একপর্যায়ে ছেলে নূরুল ইসলাম তার মা নূরনেছাকে বেধড়ক মারধর করেন। লাঠির আঘাতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে নূরুল ইসলাম তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হামিদা বেগমকেও মারধর করে আহত করেন।

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কুয়াকাটার তুলাতলী ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

ঘটনার পরদিন সরেজমিনে গেলে আহত নূরনেছা বলেন, “আমার তিন ছেলে একসাথে জমি কিনেছে। স্থানীয় গণ্যমান্যরা জমি সমান ভাগে ভাগ করে দিয়েছেন। আমার ছোট ছেলে সরোয়ার তার ভাগে বেড়া দিতে গেলে নূরুল তাকে মারধর করে। আমি থামাতে গেলে সে আমাকেও আঘাত করে। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।”

গ্রামের বাসিন্দা ও সমাজসেবক আবদুল মান্নান বলেন, “এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের জন্য লজ্জার। নিজের মা’কে কেউ কীভাবে মারতে পারে!”

স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী শামীম হোসেন বলেন, “নূরনেছা খালা খুব নিরীহ মানুষ। তার সঙ্গে এমন আচরণ বর্বরতার নামান্তর।”

অভিযুক্ত নূরুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে কল দিলে একজন নারী পরিচয় দিয়ে জানান, নূরুল ইসলাম বর্তমানে দূরে আছেন—বলে কল কেটে দেন।

মহিপুর থানার ওসি তারিকুল ইসলাম জানান, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা এবং নেটিজেনরা বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *