
সংবাদ ২৪ বিডি ডেস্ক নিউজ:
পটুয়াখালীর গলাচিপার দুর্ধর্ষ চোর ও ডাকাত চক্রের অন্যতম হোতা ইয়াকুব মৃধা (৪৪) অবশেষে র্যাবের হাতে ধরা পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি ও ডাকাতির মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এই অপরাধীকে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে বরগুনার আমতলী বাজার সংলগ্ন পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক থেকে র্যাব-৮, সিপিসি-১-এর বিশেষ অভিযানে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ইয়াকুব মৃধা গলাচিপার শৈলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং এলাকার কুখ্যাত অপরাধী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ঢাকা, যশোর, ধামরাই ও বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১০টির বেশি চুরি ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির বিশাল নেটওয়ার্ক পরিচালনার কথা স্বীকার করেছে।
একাধিক জেলার মামলায় পলাতক
র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ইয়াকুব মৃধার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে—
ঢাকা (গুলশান থানা): ডাকাতি ও সহিংস অপরাধের মামলা (মামলা নং ৬১, তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১১, ধারা ৩৯৫/৩৯৬/৪১২)।
যশোর থানা: ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা (মামলা নং ৭৩, তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫, ধারা ৩৯৯/৪০২)।
ধামরাই থানা: ডাকাতির পরিকল্পনার মামলা (মামলা নং ২২, ২০১৬, ধারা ৩৯৯/৪০২)।
ডিএমপি কদমতলী থানা: ডাকাতির প্রস্তুতি (মামলা নং ১৭, ধারা ৩৯৯/৪০২)।
যশোর কোতোয়ালি থানা: একাধিক চুরির মামলা।
বগুড়ায় আলোচিত চুরির ঘটনায় জড়িত
সম্প্রতি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শেরুয়া বটতলা এলাকায় সংঘবদ্ধ চুরির ঘটনায় ইয়াকুব মৃধার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে “কিষান অটো” নামের একটি দোকানে সাত-আটজন মুখোশধারী চোর তালা কেটে প্রবেশ করে এবং ইজি বাইক, অটোরিকশা, আইপিএস ও সিএনজির ৪১টি ব্যাটারি চুরি করে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা।
ভুক্তভোগী দোকান মালিক মো. মুনজুরুল হাসান শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করলে তদন্তে ইয়াকুব মৃধার সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে। এরপরই র্যাব-৮ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
র্যাবের বক্তব্য
র্যাব-৮-এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, “গ্রেফতারকৃত ইয়াকুব মৃধা দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘবদ্ধ চুরির গ্যাং পরিচালনা করত। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য পটুয়াখালী সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।”
অপরাধ জগতের সমাপ্তি?
ইয়াকুব মৃধার গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এলাকাবাসী মনে করছে, এই গ্রেফতারের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কার্যক্রমে বড় ধরনের ধস নামবে। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে আরও অভিযান প্রয়োজন।