
এম. নাছির উদ্দীন -কলাপাড়া, পটুয়াখালী
পিতার দায়ের করা মামলার রেশ গিয়ে ঠেকল সন্তানের রক্তাক্ত শরীরে। চাঁদাবাজির মামলার প্রতিশোধ নিতে কলাপাড়ায় প্রকাশ্যে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে কলাপাড়া হাসপাতালে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নাওভাঙ্গা এলাকায়। ভুক্তভোগী ইমরান মীর (২৫) স্থানীয় ঘুটাবাছা এলাকার জালাল মীরের ছেলে এবং বরিশাল সরকারি কলেজের বিএ পাস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
মামলার পটভূমি
ইমরানের পিতা জালাল মীর অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে অর্থ দাবি করে আসছিল। ১৩ এপ্রিল রাতে রফিক, সান্টু, রাসেল, আল আমিন ও আবদুল হক ঘরামির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার ওপর হামলা চালিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।
ঘটনার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু সমাধান না হওয়ায় অবশেষে গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) জালাল মীর কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
প্রতিশোধ
পরদিনই (৩০ এপ্রিল) দুপুরে ইমরান মীর পাখিমারা বাজারের দিকে যাওয়ার সময় নাওভাঙ্গা এলাকায় উৎপেতে থাকা আল আমিন ও তার সহযোগীরা তার গতিরোধ করে। আল আমিন হুমকি দিয়ে বলেন, “তোর বাবার মামলা উঠিয়ে দে, না হলে এবার ওকে নয়, তোকেই খতম করব।” কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাসেল (৩০), জাকারিয়া (৩৫), সজীব (৩০) ও ইয়াকুব (৩২) মিলে রড দিয়ে ইমরানকে পিটিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে ইমরান জ্ঞান হারালে হামলাকারীরা তাকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা দ্রুত ইমরানকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সূত্র।
অভিযুক্তের বক্তব্য ও পুলিশের অবস্থান
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত আল আমিন বলেন, “আমি ইমরানকে মারিনি। সে আমাদের আগেও নির্যাতন করেছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম জানান, “এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়দের উদ্বেগ
এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, “মামলার জের ধরে সন্তানের ওপর এমন নৃশংস হামলা নজিরবিহীন। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে