ভাঙারী চোরাই চক্রের দৌরাত্ম্য, ধানখালীসহ উপকূলে কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্যের রাজত্ব

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ধানখালীসহ উপকূল অঞ্চলে ভাঙারী চোরাই চক্রের দৌরাত্ম্য রীতিমতো উদ্বেগজনক আকার ধারণ করেছে। পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের মূল্যবান সরঞ্জাম চোরাই পথে বিক্রির মাধ্যমে কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নীরব ভূমিকা এবং কিছু অসাধু ব্যক্তির সহযোগিতায় এ অবৈধ কার্যক্রম চলছে প্রায় অবাধে।

২০১৬ সাল থেকে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে ওঠা এ চক্রের কার্যক্রম দিন দিন আরও সংগঠিত হচ্ছে। লোহালক্কর, স্টিল, তামা, সোলার প্যানেল, বিদ্যুৎ ট্রান্সমিটার এবং ব্যাটারির মতো রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচার করে ভাঙারী ব্যবসার আড়ালে চক্রটি বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

তদন্তের চিত্র:
তথ্যসূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া পৌর শহরের হেলিপ্যাড এলাকার অপু সাহার আড়তে দিনরাত চোরাই মালামাল বোঝাই ট্রাক লোড-আনলোড হয়। ধানখালীর গিলাতলা এলাকায় দুটি টিনের ঘরে চোরাই মালামাল মজুদ করে ট্রাকের মাধ্যমে পাচার করা হচ্ছে। চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে রিন্টু হাওলাদার, যার বিরুদ্ধে পুরাতন মাছুয়াখালী ব্রিজের লোহালক্কর চুরির অভিযোগ উঠেছে।

গিলাতলা এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের সীমানা প্রাচীরে সুরঙ্গ কেটে মাল পাচার করা হয়। এতে চোরাই চক্রের সোহেল মোল্লা, কালাম তালুকদার, রাসেল গাজীসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এ অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে, অথচ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য:
মাছুয়াখালী ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জদু মিয়া জানান, চুরির সময় তিনি রিন্টু হাওলাদারসহ আরও ১০-১২ জনকে দেখতে পান। পরে তাকে এ নিয়ে মুখ না খুলতে হুমকি দেওয়া হয়।

ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া:
ভাঙারী ব্যবসায়ী অপু সাহা স্বীকার করেছেন, গিলাতলা থেকে এক গাড়ি ভাঙারী মাল সংগ্রহ করেছেন। অপরদিকে কিবরিয়া দাবি করেন, তিনি কেবল বৈধ কাগজপত্র দেখে মাল ক্রয় করেন।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল ইসলাম জানান, বেশ কয়েকবার চোরাই মাল আটক করা হয়েছে। তবে মামলা না হওয়ায় এসব মাল থানার সামনেই পড়ে রয়েছে। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশের তারিখ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *