
সংবাদ ২৪ বিডি নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগের একের পর এক নেতার দলত্যাগ। দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই নেতারা নানা উপায়ে সংগঠন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে সমালোচনার মাধ্যমে, কেউ আবার সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছেন। এমনকি কেউ কেউ প্রতীকী শুদ্ধিকরণের আয়োজনও করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব পদত্যাগের পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের সময় বিভিন্ন সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে অনেক নেতা মামলার মুখোমুখি হয়েছেন, কেউ কেউ রয়েছেন কারাগারে। আন্দোলনের সময় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের গা-ছাড়া মনোভাব এবং সংকটময় মুহূর্তে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দৃশ্যত অনুপস্থিতিও নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র হতাশার জন্ম দিয়েছে।
বিশেষ করে ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর সহিংস দমন-পীড়নের ঘটনায় দলীয় কর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশ এলেও, পরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দায়িত্ব এড়াতে তাদের পাশে দাঁড়ায়নি—এমন অভিযোগ করেছেন অনেকেই। অনেক নেতার মতে, দলীয় স্বার্থে মাঠে নামার পর ব্যক্তিগতভাবে সেই সিদ্ধান্তের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে তাদের।
অন্যদিকে, দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর নেতৃত্ব সংকট, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও বিদেশে অবস্থানরত শীর্ষ নেতাদের অজানা পরিণতি, দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে নেতাদের মনে গভীর সংশয়ের সৃষ্টি করেছে।
তাছাড়া, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণে দলটির প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব সংকট—এসব মিলিয়ে অনেক নেতারাই এখন বিকল্প চিন্তা করছেন।
অনেকে মনে করছেন, জনমানসে ব্যাপকভাবে সমালোচিত একটি দলে থেকে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয় বলেই নেতারা দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এ সময়টিতে আওয়ামী লীগ থেকে দলবদ্ধ পদত্যাগ যেন হয়ে উঠেছে একটি দৃশ্যমান প্রবণতা।