কুয়াকাটায় জোড়পূর্বক জমি দখলের চেষ্টা : আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা উপকূলীয় এলাকার লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভোগদখলে থাকা জমিতে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মো. আবুল কাসেম ব্যাপারি আদালতে মামলা ও নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বারবার দখল প্রচেষ্টার শিকার হচ্ছেন বলে জানান।

জানা যায়, ২০০৫ সালে কাসেম ব্যাপারি মৃত নবী খাঁর ওয়ারিশদের কাছ থেকে দলিল মোতাবেক ১.৫০ একর জমি ক্রয় করেন। এসএ রেকর্ড অনুযায়ী জমির দাগ নম্বর ছিল ৪১৩৭, ৩৯৮৯, ৩৯৯০, ৩৯৯১ ও ৩৯৯২। বিএস রেকর্ড অনুযায়ী, ওই জমির অংশ স্থানান্তর হয়ে দাগ নং ৪০৭৭ ও ৪৭৮৭-এ পরিণত হয়, যদিও সেখানে জমির পরিমাণে ১০ শতাংশ ঘাটতি দেখা যায়। এছাড়া দাগ নং ৪০৭৬-এর ৮ শতাংশ জমি ‘খাস’ হিসেবে চিহ্নিত হয়, যা বিরোধের নতুন সূত্রপাত ঘটায়।

কাসেম ব্যাপারি আদালতে মামলা দায়ের করার পরও স্থানীয় প্রভাবশালী শামছুল পঞ্চায়েতের সহায়তায় নুর মোহাম্মদ ফরাজী সেখানে বসতঘর নির্মাণ শুরু করেন। মহিপুর থানা পুলিশ একবার নির্মাণ বন্ধ করলেও কিছুদিন পর পুনরায় কাজ শুরু হয়। আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, মহিপুরের এক বিএনপি নেতা কাসেম ব্যাপারির বাড়ির ভেতর খুঁটি বসিয়ে বাড়ির সামনের খালের ভেতর পর্যন্ত দখলের চেষ্টায় সহযোগিতা করেছেন। এ বিষয়ে কাসেম ব্যাপারি বলেন, “আমাকে ও আমার পরিবারকে শামছুল পঞ্চায়েত, নুর মোহাম্মদ ফরাজী, হেমায়েত ফরাজী ও মোস্তফা মুসল্লি প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি।”

অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ ফরাজী সাংবাদিকদের কোনো মন্তব্য না করলেও তার বাবা হেমায়েত ফরাজী দাবি করেন, “শামছুল পঞ্চায়েত আমাদের ওই জমিতে থাকার অনুমতি দিয়েছেন।” তবে শামছুল পঞ্চায়েতের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক বলেন, “বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। দ্রুত তহসিলদার পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভুক্তভোগী কাসেম ব্যাপারি দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *