বাউফল প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর বাউফলে নিজ বাসা থেকে বরিশাল বিএম কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইতি দাস (২০)-এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে দাশপাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবারের বরাতে জানা যায়, ইতি দাস তার বাবা-মা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দোতলা টিনসেট ঘরে বসবাস করতেন। সোমবার রাতের খাবারের জন্য ডাকতে গিয়ে তার মা দোতলার কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পান। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পেছনের কারণ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে সোমবার দুপুরে এক বন্ধুর সঙ্গে বাইরে যান ইতি দাস। পাবলিক মাঠ সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে অবস্থানকালে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা মহসিন হাওলাদারের ছেলে রিদয় রায়হান তাদের দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে তিনি ছাত্রীর পরিবারকে খবর দিয়ে তাদের নিয়ে যেতে বলেন। পরে বিষয়টি জানিয়ে ছেলের পরিবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ দাবি করেছে, থানায় আনার তথ্য সঠিক নয়।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইতি দাস বাড়ি ফেরেন। এরপর থেকে পরিবারের কেউ তাকে দেখেনি। রাতে ডাকতে গিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
সামাজিক লজ্জা ও মানসিক চাপের ইঙ্গিত
ঘটনার পর নিহতের ফেসবুক আইডি খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা তার মৃত্যুর আগে মানসিক চাপে থাকার ইঙ্গিত দেয়।
এ বিষয়ে রিদয় রায়হান বলেন, “আমি ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুকে আপত্তিকর অবস্থায় পাই, তাই তাদের পরিবারকে জানাই। কিন্তু তারা আসার পরিবর্তে পুলিশ পাঠায়। এতে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়, মেয়েটি কান্না করতে করতে বাড়ি চলে যায়।”
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল হোসেন জানান, নিহত ছাত্রীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি সামাজিক চাপ ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু—এ নিয়ে তদন্ত চলছে।