কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
২০ জানুয়ারি ২০২৫
বঙ্গোপসাগরে বেড়েই চলেছে অনুমোদনহীন নৌযান ও ট্রলিং বোটের ব্যবহার। এসব বোটে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের মাধ্যমে নির্বিচারে মাছ ধরায় সব প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে। ফলে সরকারের মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মৎস্য গবেষকদের পর্যবেক্ষণ
গবেষকরা বলছেন, অগভীর পানিতে ট্রলিং বোট দিয়ে মাছ ধরার ফলে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে। এতে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে কয়েক বছরের মধ্যেই সমুদ্র মাছশূন্য হয়ে যেতে পারে।
সরেজমিন পর্যবেক্ষণ
মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুর এলাকায় দেখা যায়, সমুদ্র থেকে ফিরে আসা ট্রলিং বোটগুলোতে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে শিকার করা মাছ বোঝাই। এসব জালে বড় মাছের পাশাপাশি পোনা ধরা পড়ছে, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মৎস্যজীবীদের সংকট
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষিদ্ধ ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্যে বৈধ পদ্ধতিতে মাছ ধরায় তারা প্রায় শূন্য হাতে ফিরছেন। বহু জেলে পরিবার এখন চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে। পটুয়াখালীর খাজুরা এলাকার জেলে সিদ্দিক ফকির বলেন, “ট্রলিং বোট বন্ধ না হলে সমুদ্র মাছশূন্য হয়ে যাবে, আর আমাদের বাঁচার উপায় থাকবে না।”
সরকারি নীতিমালার অমান্যতা
নীতিমালা অনুযায়ী, ৪০ মিটারের কম গভীরতায় ট্রলিং নিষিদ্ধ। কিন্তু এই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ট্রলিং বোটগুলো সমুদ্রে মাছ আহরণ করছে। মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বোট মালিকরা আদালতে রিট করায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অসুবিধা হচ্ছে।
মৎস্য বিভাগের মন্তব্য
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, “আমরা নিষিদ্ধ ট্রলিং বোট বন্ধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মাইকিং ও সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। তবে আইনি জটিলতা নিরসন না হলে স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।”
উদ্বেগ ও সম্ভাব্য সমাধান
মৎস্যজীবী সংগঠনগুলো অবিলম্বে নিষিদ্ধ ট্রলিং বোট বন্ধ এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে। সরকারের উদ্যোগে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব হলে সমুদ্রের মৎস্যসম্পদ রক্ষা পাবে এবং জেলেদের জীবিকা নিশ্চিত হবে।
নোট
নিষিদ্ধ ট্রলিং বোটের দৌরাত্ম্য বন্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এর জন্য আইনি পদক্ষেপ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।