
এম. নাছির উদ্দীন, কলাপাড়া,(পটুয়াখালী) পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইউএনও মো. রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে করা ‘ঝাড়ু মিছিল’ ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত—এমনটাই মনে করছেন সচেতন নাগরিক ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট মহল।
গত মঙ্গলবার (৩ জুন) কুয়াকাটা সৈকতে ফটোগ্রাফি ও স্টুডিও ব্যবসার আড়ালে চলা এক ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। অভিযানে সৈকতের অনুমোদনবিহীন একাধিক স্টুডিও থেকে কম্পিউটার, প্রিন্টার, পিসি, আইপিএসসহ আনুমোদনহীন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
এই অভিযানের প্রতিবাদে ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় ফটোগ্রাফার ও স্টুডিও মালিকদের একটি গোষ্ঠী ইউএনও মো. রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করে ও ‘পদত্যাগ চাই’ স্লোগান তোলে। তারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও আচরণগত অনিয়মের অভিযোগও আনে।
তবে এলাকাবাসী ও পর্যটকরা বলছেন—এই মিছিল মূলত অসাধু সিন্ডিকেটের প্রতিক্রিয়া। দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু স্টুডিও ব্যবসায়ী সৈকতে পর্যটকদের জিম্মি করে ছবি তোলা ও প্রিন্টিং সেবার নামে চড়া মূল্য আদায় করে আসছিল। এতে একদিকে পর্যটক হয়রানি হচ্ছিল, অন্যদিকে কুয়াকাটার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
উপজেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, সৈকত ব্যবস্থাপনা ও কমিশন কমিটির সুপারিশ অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্টুডিও গুলো বন্ধ করার নির্দেশনা থাকলেও তা অমান্য করা হয়। এতে বাধ্য হয়েই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কলাপাড়াবাসীর পক্ষে অনেকেই বলেন—ইউএনও রবিউল ইসলাম একজন নিষ্ঠাবান ও কর্মঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, যিনি কুয়াকাটাকে একটি নিরাপদ, পর্যটকবান্ধব ও শৃঙ্খলাপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
তারা বলেন, “জনস্বার্থে নেওয়া উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে এই ষড়যন্ত্রমূলক মিছিল ও অপপ্রচার করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসন যেন এসব দুষ্কৃতিকারীর চাপে নতি স্বীকার না করে, আমরা সেই প্রত্যাশাই করি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন
সিন্ডিকেট ভাঙতে স্টুডিও বন্ধে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্বঘোষিত সময়সীমা অমান্য করায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় পর্যটকসহ সচেতন মহলের একাংশ মনে করেন, এই পদক্ষেপ পর্যটন বান্ধব এবং জনস্বার্থে। সৈকতের কিছু চিহ্নিত স্টুডিও মালিক দীর্ঘদিন ধরে পর্যটকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতেন, যা কুয়াকাটার ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছিল। ইউএনও’র এই উদ্যোগ সেই অনিয়মের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট বার্তা।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইউএনও রবিউল ইসলামের এই অভিযানের প্রশংসা করছেন অনেকেই। কুয়াকাটাকে পর্যটকবান্ধব ও নিয়মতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার এই প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ।