
এম. নাছির উদ্দীন‘ কলাপাড়া পটুয়াখালী:
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা দাখিল মাদ্রাসা প্রায় ৫০ বছরেও উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া পায়নি। জরাজীর্ণ ভবন, পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাব, শিক্ষার আধুনিক সরঞ্জামের সংকট, শৌচাগারের ভগ্নদশা, ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভোগান্তি চরমে। পাকা সড়ক না থাকায় বর্ষায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় আসতে বিপাকে পড়তে হয়।
মাদ্রাসাটি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৮৬ সালে এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু আজও এটি কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। বর্তমানে ১৪ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ৯টি পদ শূন্য। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দুই শতাধিক। তবে জরাজীর্ণ ভবন এবং ভগ্ন টিনশেড ঘরের কারণে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান মীম জানান, “আমাদের গভীর নলকূপ নেই। বিশুদ্ধ পানি আনতে দূরে যেতে হয়। ক্লাস করতে ভবনের নাজুক অবস্থার কারণে অনেক কষ্ট হয়।” নবম শ্রেণির মুনিয়া বলেন, “উত্তর পাশের খাল পার হতে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। বর্ষায় দুঃসাহসিক ভোগান্তি পোহাতে হয়।”
কমনরুম এবং আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ল্যাবের অভাবও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়েছে। শৌচাগারগুলো অপরিস্কার এবং ব্যবহার অনুপযোগী বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
অভিভাবক সোহেল খান বলেন, “মাদ্রাসার ভবন এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েই যায়। এছাড়া যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি, গভীর নলকূপ স্থাপন এবং নতুন ভবন নির্মাণ অতি জরুরি।”
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আ. গফফার বলেন, “আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে নতুন ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান খান জানান, “সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে প্যাডে আবেদন করতে বলা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
অর্ধশতকের অবহেলায় জর্জরিত লোন্দা দাখিল মাদ্রাসা আজও উন্নয়নের জন্য অপেক্ষায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে—এটাই এলাকাবাসীর একমাত্র আশা।