পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ: দৃশ্যমান পদক্ষেপের অভাবে জনমনে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি পটুয়াখালী

পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়র থাকাকালীন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ, অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো গুরুতর বিষয় উঠে এসেছে। তবে অভিযোগ দায়েরের দীর্ঘ সময় পরেও তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়।

পৌরসভার মশা নিধনের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হলেও অধিকাংশ এলাকায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, চাকরি দেওয়ার নামে অসংখ্য প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করা হয়েছে।

পাঁচটি পুকুর খনন ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি, গণপূর্ত বিভাগ এবং উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এই প্রকল্পগুলোকে পৌরসভার কাজ হিসেবে দেখিয়ে প্রায় নব্বই কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।

আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি বাজার পুনর্গঠনের পর স্টল বরাদ্দে আগের ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে নতুনদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেয়র ও তার ভাই পৌরসভা এবং এলজিআরডির কাজের দরপত্রে সরাসরি অংশগ্রহণ করতেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা পদ্মা ব্যাংকের মাধ্যমে ভুয়া পে অর্ডার তৈরি করে দরপত্র দাখিল করতেন। এই ঘটনায় পদ্মা ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তার চাকরিও চলে যায়।

সাবেক মেয়র সফিকুর রহমানের আমলে রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের অর্থ ঠিকাদারকে পরিশোধ না করে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা হয়। অভিযোগ রয়েছে, গত পাঁচ বছরে পৌরসভার বেশিরভাগ কাজ মেয়রের ঘনিষ্ঠ লোকজন পেয়েছেন।
স্থানীয়দের ক্ষোভ
পটুয়াখালীর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাবেক মেয়রের দুর্নীতির চিত্র সত্য প্রমাণিত হলে “পাবনার বালিশ কাণ্ডকেও হার মানায়।” পৌর শহরের কিছু জায়গায় উন্নয়ন হলেও বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি।

পটুয়াখালীর বাসিন্দারা দুর্নীতির ঘটনায় দ্রুত তদন্ত এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। পৌর শহরের উন্নয়ন কার্যক্রম সীমিত থাকলেও অভ্যন্তরীণ এলাকায় কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি। জনগণ আশা করছে, দুর্নীতির এই চক্র ভেঙে সরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *