কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব রাস উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। জাগতিক পাপ মুক্তির বিশ্বাসে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সমুদ্র সৈকতে হাজির হয়েছেন হাজারো পূণ্যার্থী।

সন্ধ্যায় শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে আয়োজিত হয়েছে বিশেষ পূজা, মঙ্গল ঘট স্থাপন, আরতি, আলোচনা সভা এবং প্রসাদ বিতরণ। রাতভর চলবে সংগীতানুষ্ঠান, ভাবগান ও মাহনাম কীর্তন। শনিবার ভোরে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
পূর্ণিমা তিথি চলমান থাকায় আজ ভোরেই অনেক পূণ্যার্থী, বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজন, সমুদ্র সৈকতে স্নান সম্পন্ন করেছেন। কুয়াকাটার সৈকতে আগত মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
পর্যটকদের অভিজ্ঞতা:
টাঙ্গাইল থেকে আসা শ্রী শুশীল বাবু জানান, “এ বছরের রাস উৎসবে দারুণ ভালো লাগছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চোখে পড়েছে। তবে কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কটি খুবই খারাপ, এটি দ্রুত মেরামত করা দরকার।”
স্পিডবোট ব্যবসায়ী মো. বেলাল বলেন, “এবার রাস উৎসবে লোকজনের উপস্থিতি অতীতের যে কোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে বলে আশা করছি।”

পর্যটন খাতের প্রস্তুতি:
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, “হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব উপলক্ষে পর্যটকদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াকাটার কোনো হোটেল-মোটেল খালি থাকবে না।”
নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন:
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশের জোনাল এসপি আবুল কালাম আজাদ জানান, “রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনী নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।”
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কৌশিক আহমেদ বলেন, “রাস উৎসব উপলক্ষে প্রায় তিন লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আমরা আশা করছি। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশ, মহিপুর থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজ করছে।”
কুয়াকাটা রাস উৎসব, ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের পাশাপাশি সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণপিপাসুদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। উৎসবের প্রতিটি আয়োজনেই দেখা যাচ্ছে ভক্তি আর আনন্দের মিশেল।
প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার সার্বিক বিবরণ:
প্রশাসন থেকে জানা গেছে, উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রকাশিত তারিখ: ১৫ নভেম্বর-২০২৪