আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে শতবর্ষ পুরনো ঐতিহ্যের রাস উৎসব কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং মন্দির এলাকা সেজে উঠেছে নতুন সাজে।

কুয়াকাটা প্রতিনিধি: আজ শুক্রবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ও কলাপাড়ায় শুরু হতে যাচ্ছে শতবর্ষী ঐতিহ্যের ধারক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব, রাস মেলা। পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবে লাখো ভক্ত সমবেত হবেন। এ উপলক্ষে কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দির এবং কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার প্রস্তুতি।

শিল্পীদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় সাজানো হয়েছে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা। শনিবার ভোরে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ভক্তদের উপস্থিতিতে সৈকতে বসবে সহস্রাধিক অস্থায়ী দোকান। সার্বিক নিরাপত্তার জন্যও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

কুয়াকাটা রাস পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মণ্ডল বলেন, এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে ভক্তদের পদভারে মুখরিত হবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। আজ সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সারারাত ধরে চলবে নাম কীর্তন, ভাগবত পাঠ ও আরতি। ভারতের কবিতা ঘোষ এ বছর শ্রীকৃষ্ণের লীলাকীর্তনে অংশগ্রহণ করবেন, এবং অনুষ্ঠানমালা আরও প্রাণবন্ত করতে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

শনিবার ভোরে রাস পূর্ণিমা লগ্নে ভক্তরা পাপমোচনের আশায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে স্নানে অংশ নেবেন। এদিন অনেকেই মানতের পূজা দিয়ে পুরোহিতদের নিয়ে পুণ্যস্নান করবেন। নানা ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষও মিলিত হবেন রাস পূজা ও সাগরস্নানে।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটার হোটেল-মোটেলগুলোতে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে, এবং ৭০ শতাংশ রুম ইতিমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে।

কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের এসপি আবুল কালাম আজাদ জানান, রাস পূজা ও পূণ্যস্নানে আগত ভক্ত ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করবে।

কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কৌশিক আহমেদ বলেন, এবারের রাস উৎসবে প্রায় তিন লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। মহিপুর থানা পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, টুরিস্ট পুলিশ, এবং প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রস্তুত রয়েছেন নিরাপত্তার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *