একজন কলেজ শিক্ষিকা হয়েও কীভাবে ১৫০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেন ফাতেমা আক্তার রেখা? বিষয়টি এখন স্থানীয়দের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান মুহিবের স্ত্রী রেখার নামে অন্তত ৩৭ একর জমি রয়েছে, যার বেশিরভাগই কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে।

জমির মালিকানা ও ক্রয়ের ইতিহাস
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, রেখার নামে মোট ৩০টি দলিলে বিপুল পরিমাণ জমির দলিল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর: ইটবাড়িয়া মৌজায় তাপস সাহা গংয়ের কাছ থেকে ৮ একর জমি কেনা।
২০২৪ সালে: ধুলাসার মৌজায় আলমগীর হোসেন হাওলাদারের কাছ থেকে ৫.২৬ একর জমি ক্রয়।
২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর: বৌলতলীতে ০.৬১ একর জমি কেনা।
২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট: কাউয়ারচর মৌজায় দেড় একর জমি নেওয়া। একই দিনে ১.৩৪ একর জমি কেনা।
ছাড়াও ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় জমি কিনেছেন তিনি। এসব জমি কেনার দলিলগুলোতে উল্লেখিত দামে এবং পরিমাণে কিছুটা অসামঞ্জস্য থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সম্পদের উত্স নিয়ে প্রশ্ন
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফাতেমা আক্তার রেখা স্বামীর এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হন। সরকারি টিআর-কাবিখা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, টেন্ডার বাণিজ্য এবং অন্যান্য অবৈধ উপায়ে তিনি এই সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
একজন কলেজ শিক্ষিকা হিসেবে তার মাসিক বেতন মাত্র ৩৮ হাজার টাকা। অথচ এত বিপুল সম্পদ অর্জন কীভাবে সম্ভব হলো, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে।
এ বিষয় রেখার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এমনকি তার বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর থেকে তাকে এলাকায় আর দেখা যায়নি।
স্থানীয়দের মতামত
ধুলাসার ইউনিয়নের এক সাবেক চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, “স্কুল-কলেজের চাকরি বাণিজ্য থেকে শুরু করে সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেই রেখা এই বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছেন।”
কলেজ শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার রেখার বিপুল সম্পদের উত্স এবং এর বৈধতা নিয়ে তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তার এই সম্পদের গল্প দেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে