
এম. নাছির উদ্দীন কলাপড়া, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামে সন্ত্রাসী শাহীন প্যাদা ও মানছুর প্যাদার নেতৃত্বে একের পর এক অপরাধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। দোকানপাট ও বাড়িঘর ভাঙচুর, চাষের মাছ চুরি, এবং খাল দখলসহ নানা অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৃত হাকি প্যাদার ছেলে শাহীন প্যাদা এবং মৃত নোয়াব আলীর ছেলে মানছুর প্যাদা দীর্ঘদিন গ্রাম থেকে বাইরে থাকার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তারা এলাকায় ফিরে আসে। ফিরে আসার পরপরই তারা চাঁদাবাজি, ডাকাতি, এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত হয়।
খাল দখল ও মাছ চুরি
মাছুয়াখালী গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি খাল দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসী ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল। এই আয়ের একটি অংশ গ্রামের মসজিদগুলোর ব্যয়ে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু শাহীন ও মানছুর খালটির দখল নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং লক্ষাধিক টাকার মাছ জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। গত বৃহস্পতিবার তারা মাছ চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেও উল্টো স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখায়।
অপকর্মের শিকার সাধারণ মানুষ
গ্রামবাসীদের মধ্যে মালেক ভেন্ডার, জয়নাল গাজী, সোয়েব খাঁন, নাসির হাওলাদার, এবং কবির মৃধার দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করে মানছুর-শাহীন বাহিনী। স্থানীয় সোহাগ মৃধা, শিল্পী বেগমসহ অনেকে জানান, তারা ভীত-সন্ত্রস্ত জীবনযাপন করছেন।
বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্ম
অভিযুক্তরা বিএনপির কোনো পদে নেই, কিন্তু নিজেদের বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে এসব অপকর্ম চালাচ্ছে। স্থানীয় বিএনপি নেতারা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মাছুয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মিলন জানান, “শাহীন ও মানছুর বিএনপির কেউ নয়। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি শাহীন তার মাকেও মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।”
বিএনপির অবস্থান
কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান চুন্নু তালুকদার বলেন, “বিএনপি জনগণের দল। নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ও দখলবাজদের কোনো স্থান বিএনপিতে নেই। যারা এসব অপকর্মে লিপ্ত, তারা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
গ্রামবাসীর দাবি
মাছুয়াখালী গ্রামবাসী শাহীন ও মানছুরের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেছেন, তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।