মাগুরায় শিশু আছিয়া হত্যা মামলায় হিটু শেখের ফাঁসি, খালাস ৩

সংবাদ ২৪ বিডি ডেস্ক রিপোর্ট :
মাগুরায় ব্যাপক আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। শনিবার (১৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে একই মামলার অপর তিন আসামি—হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগম ও দুই ছেলেকে খালাস দেওয়া হয়।

রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—যেখানে একজন ব্যক্তি নিজেই ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছেন, সেখানে তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন আনা হলো এবং তারা কীভাবে খালাস পেলেন?

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে হিটু শেখ একাই এ ঘটনার জন্য দায় স্বীকার করেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা, মাগুরা সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত), ১৩ এপ্রিল জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে চারজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনেন। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই বিচার কার্যক্রম চলতে থাকে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৩ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
ঘটনার পর দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। স্থানীয় আইনজীবীরাও ঘোষণা দেন যে, অভিযুক্তদের কেউ যেন কোনো ধরনের আইনি সহায়তা না পান।

রায়ের ফলে একদিকে যেমন প্রধান আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় অনেকে সন্তোষ প্রকাশ করছেন, অন্যদিকে খালাসপ্রাপ্তদের নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। অনেকের ধারণা, বিষয়টি আরও গভীর তদন্তের দাবি রাখে। বিচারক তার রায়ে যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন, তা বিস্তারিতভাবে জনসমক্ষে না আসায় ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।

এখন দেখার বিষয়—রাষ্ট্রপক্ষ বা ভিকটিমের পরিবার খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে কিনা। পাশাপাশি এই ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দিল, শিশুদের নিরাপত্তা ও নারী-শিশু নির্যাতন মামলায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সমাজ ও রাষ্ট্রের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *